মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
প্রফেসর ডঃ এ কে এম মোতাহার হোসেন (January 1, 1963-November 21, 2014)
মোবাইল ফোন যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কিন্তু ঠিকমত ব্যবহার না করলে এটি ক্ষতির কারন হয়ে দাড়ায়। কাজেই মোবাইল ব্যবহারকারীদের এর সঠিক ব্যবহার
সম্পর্কে জানা আবশ্যক। অন্যথায় লোকজন তাদের দ্বারা বিরক্ত বই কিছুই হবে না। নীচে মোবাইল ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলী প্রদান করা হল।
সম্পর্কে জানা আবশ্যক। অন্যথায় লোকজন তাদের দ্বারা বিরক্ত বই কিছুই হবে না। নীচে মোবাইল ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলী প্রদান করা হল।
মোবাইল সেট সংক্রান্ত
১. প্রত্যেক মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্য মোবাইল এমনভাবে ব্যবহার করা উচিৎ যাতে অন্য লোক তার দ্বারা বিরক্ত না হয়।
২. মোবাইল ফোনে নিয়মিত চার্জ দিতে হবে।
৩. মোবাইলে সবসময় কমপক্ষে ২০ টাকা (balance)রাখা উচিৎ।
৩. মোবাইলে সবসময় কমপক্ষে ২০ টাকা (balance)রাখা উচিৎ।
কল (Call) সংক্রান্ত
৪. কল করার শুরুতেই নিজের নাম এবং পরিচয় দিতে হবে।
৪. কল করার শুরুতেই নিজের নাম এবং পরিচয় দিতে হবে।
৫. এরপর যার কাছে কল করা হয়েছে তাকে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে, সে ব্যস্ত আছে কিনা এবং এখন তাঁর সাথে কথা বলা যাবে কিনা।যদি কাংখিত ব্যক্তি ব্যস্ত থাকেন, তবে
তাঁর free time জেনে নিয়ে ঐ সময় তাঁকে call করতে হবে।
তাঁর free time জেনে নিয়ে ঐ সময় তাঁকে call করতে হবে।
৬. কথা হবে সংক্ষিপ্ত, বিস্তারিত এবং অপ্রয়োজনীয় কথা সময় ও অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। এ ছাড়াও এরূপ অনর্থক বেশিক্ষণ কথা বলা নেটওয়ার্ক চ্যানেলকে বন্ধ করে
রাখে, ফলে অন্য মানুষজন তাদের প্রয়োজনীয় কল করতে পারে না।
৭. মিসকল দেওয়া কাম্য নয়। তবে,যদি আর্থিক উৎস একই হয় অথবা আগে থেকে অনুমতি দেওয়া থাকে,তবে মিসকল দেওয়া যেতে পারে। উপরোক্ত ক্ষেত্র ব্যতিত অন্যত্র
মিসকল দিলে, তা মিসকল দাতার প্রতি নেতিবাচক ধারানার জন্ম দিতে পারে।
৮. মোবাইল সর্বদা খোলা রাখতে হবে।কারন,যদি ফোন বন্ধ থাকে তাহলে সে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কল সম্পর্কে জানতে পারবে না
সুতরাং কল ব্যাকও করতে পারবে না।(মোবাইল খোলা রাখলে মিস কল হিসেবে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কল, ব্যাক করা সহজ।)
৯. নামায,ঘুম এবং গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর সময় (যখন ফোন রিসিভ করা সম্ভব নয়) মোবাইল সাইলেন্ট করে রাখতে হবে,
যাতে কোন কল আসলে, পরে তা ব্যাক করা যায়।
১০. ঘুম থেকে উঠে, গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এবং নামাযের পর কোন ‘‘কল’’ এসেছিল কিনা তা অবশ্যই দেখতে হবে।
১১. গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ যেমন মুফতি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডাক্তার ইত্যাদি, যাঁরা বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকেন,তাঁদের বেলায় কথা বলার আগে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে।
যদি নিয়মিত তাঁদের সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয়, তবে আগে থেকেই
কোন সময়ে কথা বলা তাঁদের জন্য সুবিধাজনক তা জেনে নিতে হবে।
১২. যদি কারো সাথে কথা বলার দরকার হয় আবার যদি এও মনে হয় যে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি হয়তবা এখন ঘুমাচ্ছেন অথবা ব্যস্ত আছেন ; তখন তাঁকে মেসেজ দিতে হবে যেন
তিনি তাঁর free time এ এই মোবাইল নাম্বারে মিসকল দেন /অথবা তাঁর free time টা মেসেজ করেন।যখন তিনি মেসেজ দেখে কল-ব্যাক করবেন, তখন তাঁর কল কেটে
দিয়ে (অথবা কল শেষ হবার পর ) আবার তাঁকে কল করতে হবে।
১৩. বিদেশে কল করার আগে খেয়াল করতে হবে যে,এখন সেখানে ঘুমের সময় কিনা।গভীর রাতে কিংবা ঘুমের সময় তাদের বিরক্ত করা উচিৎ নয়।
১৪. গায়রে মাহরাম মহিলা★/পুরুষ✶✶ এর সাথে কথা বলা ক্ষতিকর।গায়রে মাহরাম মহিলা কোন পুরুষকে কল করলে ঐ পুরুষ সংক্ষেপে জবাব দেবে।অনুরুপভাবে গায়রে
মাহরাম পুরুষ কোন মহিলাকে কল করলে সেও সংক্ষেপে জবাব দেবে।
{★গায়রে মাহরাম মহিলা: ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক যে সমস্ত মহিলাদের সাথে, শরীয়ত সম্মত কারন ব্যতীত কথা বলা বা দেখা অথবা দেখাকরা ( পর পুরুষদের জন্য) নিষিদ্ধ।
✶✶গায়রে মাহরাম পুরুষ: ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক যে সমস্ত পুরুষদের সাথে, শরীয়ত সম্মত কারন ব্যতীত কথা বলা বা দেখা অথবা দেখাকরা (অন্য মহিলাদের জন্য) নিষিদ্ধ।}
১৫. কোন পুরুষ প্রয়োজনবশত কোন গায়রে মাহরাম মহিলাকে কল করলে, ঐ মহিলা সংক্ষেপে জবাব দেবে,এবং অবশই জবাব দেবার সময় মিষ্টি ভাষা ব্যবহার করবে না।
মোবাইল রাখা ও নাম্বার সংক্রান্ত
১৬. নিজের মোবাইল সর্বদা নিজের কাছেই রাখতে হবে এবং অন্য কারো কাছে এমনকি নিজের স্ত্রীর কাছেও রাখা যাবে না।
১৭. পার্শ্ব পকেট অথবা এমন কোন জায়গায় মোবাইল রাখা উচিৎ নয় যেখান থেকে মোবাইল সহজেই চুরি হতে পারে।আবার মোবাইল বুক পকেটেও রাখা উচিৎ নয়,কারন
মোবাইল হতে নির্গত তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ, দেহের মারাত্মক ক্ষতি করে।
১৭. পার্শ্ব পকেট অথবা এমন কোন জায়গায় মোবাইল রাখা উচিৎ নয় যেখান থেকে মোবাইল সহজেই চুরি হতে পারে।আবার মোবাইল বুক পকেটেও রাখা উচিৎ নয়,কারন
মোবাইল হতে নির্গত তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ, দেহের মারাত্মক ক্ষতি করে।
১৮. মোবাইল হারিয়ে গেলে গুরুত্বপূর্ণ নাম্বারগুলও হারিয়ে যাবে।কাজেই মোবাইলের নাম্বারগুলো অন্য সিমে বা অন্যভাবে সংরক্ষণ করে রাখা উচিৎ।
১৯. মোবাইল হারিয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে জানিয়ে সিম বন্ধ করে দিতে হবে।
২০. মোবাইল হারানোর পর নতুন সিম নিলে তা অবশ্যই পূর্বের নাম্বার হতে হবে।নাম্বার পরিবর্তন করলে তা অন্যদের জন্য অসুবিধার কারন হতে পারে।
২১. যদি বিশেষ কোন কারনে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করতেই হয়, তাহলে জলদি পরিচিতজনদের নতুন নাম্বার জানিয়ে দিতে হবে।
২২. একটি নাম্বার ব্যবহার করাই ভাল।এটা সবার জন্য সুবিধাজনক। ডুয়েল /ট্রিপল /টেট্রা (দুই/তিন/চার)সিম ওয়ালা মোবাইল,যেখানে সবসময় সবগুলো সিম চালু থাকে,
এমন মোবাইলের ক্ষেত্রে একাধিক নাম্বার ব্যবহার করা যেতে পারে।
২৩. কোন গান বা বাজনা মোবাইলের রিং-টন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। কারন ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক গান-বাজনা হারাম।
২৪.অনুরুপভাবে কোরআন শরীফের আয়াতও রিং-টন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
২৫. মোবাইলের স্ক্রিনে কোন কালেমা অথবা কোরআন শরীফের আয়াত রাখা যাবে না। তা সে স্ক্রিন-সেভার বা অন্য যেকোনো ভাবেই হক না কেন।
২৬. ওয়েলকাম-টিউন অর্থাৎ যে টিউন, কল কারী শুনতে বাধ্য হয়,খুব খারাব জিনিস। জোর করে অন্য মানুষকে গান-বাজনা শুনতে বাধ্য করা একেবারেই সমীচীন নয়।
২৭. নামাযের সময় মোবাইল বেজে উঠলে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল বন্ধ করে ফেলতে হবে; যদিও আমলে কাছির হয়।(‘‘আমলে কাছির’’ হল এমন কাজ,যা নামায রত
ব্যক্তি করলে,নামাযের বাইরের মানুষ মনে করে যে লোকটা নামায পড়ছে না। আমলে কাছির করলে নামায ভঙ্গ হয়ে যায়।) যেহেতু মসজিদে মোবাইল বেজে উঠলে সমস্ত
মুসল্লিদের নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হয়, কাজেই এমতাবস্তায় নামায ভঙ্গ করে হলেও মোবাইল বন্ধ করে পুনরায় নামাযের নিয়্যত করতে হবে।
২৮. সাধারনভাবে ১৫ বৎসরের কম বয়সের ছেলেমেয়েদের হাতে মোবাইল দেওয়া উচিৎ নয়। কারন,তাদের দ্বারা মোবাইলের অপব্যবহারের সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং এর
ফলে তাদের চরিত্রও নষ্ট হতে পারে।
মোবাইল ফোন ঠিকমত ব্যবহার করলে দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি ও সফলতা বয়ে আনবে। ঠিক তেমনিভাবে মোবাইলের অপব্যবহার জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। শুধু
মোবাইল নয়, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের অপব্যবহারও মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কাজেই অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েদের মোবাইল, কম্পিউটার এবং
ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেওয়া উচিৎ নয়।
আল্লাহ সুবহানুহু ওয়া ত’লা আমাদের সবাইকে সকল আধুনিক আবিষ্কারের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করুন। (আমিন)
মূল (ইংরেজি ): প্রফেসর ডঃ এ কে এম মোতাহার হোসেন
ফার্মেসী বিভাগ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী -৬২০৫ |
ভাবানুবাদ: মোঃ ইমরান নূর মানিক
বি. ফার্ম .,এম. ফার্ম. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী- ৬২০৫ |
Get the PDF
No comments:
Post a Comment