Friday, December 10, 2021

এ ধরনের আচরণ থেকে বেঁচে থাকতে হবে:মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক

শ্রুতিলিখনঃ Mohammad Hossain 
মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক হাফি. লেখেন,

আমাদেরকে এ ধরনের আচরণ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। কয়েকটি আচরণ এখানে লেখা হল,
ক. বড়দের মজলিসে তাদের মধ্যকার কথাবার্তায় কিংবা হাসাহাসিতে শরীক হয়ে যাওয়া।
খ. বড়দের সাথে কথা বলার সময় হাত নাড়ানো।
গ. বড়দের সাথে কথা বলার সময় প্রশ্ন উত্তরের পন্থা অবলম্বন করা। যেভাবে বক্তাগণ ওয়াজে নিজেরা কিছু বলেন, কিছু শ্রোতাদের উপর ছেড়ে দেন। অথবা দরসে উসত্মাযগণ কিছু নিজেরা বলেন, কিছু ছাত্রদেরকে দিয়ে বলান।


ঘ. কাপড়-চোপড় ও সামানপত্র এলোমেলোভাবে রাখা।
ঙ. জুতো অগোছালোভাবে রাখা।
চ. জুতো হাত থেকে মাটিতে রাখার সময় উপর থেকে ছেড়ে দেওয়া।
ছ. ভেতরে গেঞ্জি, ফতুয়া এ জাতীয় কোনো পোষাক না পরে শুধু সাদা ও পাতলা জামা পরে চলাফেরা করা, বা বাইরে বের হওয়া বা দরসে যাওয়া ইত্যাদি।
জ. শুধু সেলোয়ার পরে কামরায় অথবা বারান্দায় হাঁটাচলা করা।
ঝ. শুধু লুঙ্গি পরিধান করা অবস্থায় দরজা বা জানালার আলোর সামনে দাড়ানো।


ঞ. অনেকক্ষণ বসে থাকার পর জামা-কাপড় ঠিক না করেই চলাফেরা শুরু করা। বিশেষভাবে যখন কাপড় শরীরের বিভিন্ন অংশে লেপ্টে থাকে।
ট. খুব প্রয়োজন ব্যতীত শরীরের নিম্নাংশের কাপড় ধরে হাঁটা এবং অন্যের সামনে এধরনের স্থান চুলকানো।
ঠ. অন্যের সামনে নাক-কান খুঁচিয়ে ময়লা বের করা ।
ড. লাউড স্পীকারের আওয়াজ যাচাই করার জন্যে তাতে জোরে ফুঁকতে থাকা। অথচ ফুঁকা ছাড়া আঙুলে টোকা দিয়েও যাচাই করা সম্ভব।
ঢ. ডাল ইত্যাদি তরল খাবার খেতে শ্রুতিকটু শব্দ করা। বিশেষত ইজতেমায়ী দসত্মরখানে। বিশেষভাবে যখন দসত্মরখানে আমি নতুন কিংবা দসত্মরখানে কোনো মেহমান থাকেন।
ণ. কাপড় পাল্টানোর পর পরিহিত কাপড়টি ওভাবে ফেলে রাখা।
ত. পুকুরে অথবা হাউজে (যেখানে একসাথে অনেক মানুষ গোসল করে) গোসলের সময় লুঙ্গির উপর রুমাল, তোয়ালে অথবা গামছা ইত্যাদি না পেঁচানো। বিশেষভাবে যখন লুঙ্গি পাতলা বা সাদা হয়।
থ. হাম্মাম বা ইসেত্মঞ্জাখানা ব্যবহারের পর উপরে নীচে অথবা যে অংশে পানি থাকে সে অংশে নাপাকি অথবা ছিটা নাপাকি অথবা ব্যবহৃত কুলুখ (মাটির ঢেলা, কাপড় অথবা টয়লেট পেপার- মানাদিলুল হাম্মাম-)ফেলে আসা।
এধরনের নানা দৃষ্টিকটু বা শ্রুতিকটু আচরণ যা অন্যের থেকে প্রকাশ পেলে একজন উন্নত রুচির অধিকারী মানুষের তো বটেই, একজন মোটামুটি রুচিবোধসম্পন্ন লোকেরও খারাপ লাগে তা-ই যখন নিজে করা হয় তখন খেয়ালই হয় না যে আমিও এমন অরুচিকর কাজ করছি। অথচ এটা একেবারে স্বাভাবিক, যা আমার কাছে অপসন্দনীয় তা অন্যের কাছে আমার চেয়ে বেশী অপসন্দনীয় হবে।

السعيد من وعظ بغيره ‘ভাগ্যবান সেই যে অন্যের অবস্থা দেখে উপদেশ গ্রহণ করে’ -এ প্রবাদের ভেতর এটাও শামিল যে মানুষ এধরনের স্বতসিদ্ধ বিষয়গুলোতে অন্যকে দেখে সবক হাসিল করবে।
আরো একটি দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। সেলোয়ারের উপর জামা শুধু সৌন্দর্যের জন্যে পরা হয় না; বরং জামার এক উদ্দেশ্য এটাও যে, এর মাধ্যমে সতর ভালোভাবে ঢাকা থাকে। তাই কোনো মজলিসে বসার সময় জামাকে গুটিয়ে বা যেনতেনভাবে ফেলে রাখা উচিত নয়; বরং এমনভাবে রাখা উচিত যাতে সতর ভালোভাবে ঢাকার মাকসাদ হাসিল হয় । হাঁ, বসার অবস্থাভেদে জামা রাখার অবস্থাও বিভিন্ন হবে। অনেক সময় জামা সরে যাওয়ার কারণে অথবা না, মুনাসিবভাবে বসার কারণে অপ্রীতিকর দৃশ্য সামনে চলে আসে। এদিকে খেয়াল রাখা উচিত।

No comments:

Post a Comment