যে কথাগুলো আপনাকে কেউ মুখ ফুটে বলবে না
-লিখেছেন শামসুল হক রাহমানী
যদিও স্থুল, কিন্তু এগুলো আপনার ব্যক্তিত্বকে আহত করে। দেখে নিন এমন কোন বদ অভ্যাস আপনার মাঝে আছে কিনা! থাকলে পরিহারের ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে।
- জন সম্মুখে নাকের ময়লা পরিষ্কার করা। (অনেক সময় আলচনা সভায়ও এমন করা হয়ে থাকে)
- দাঁত দিয়ে নখ কাটা।
- সর্দি অবস্থায় মানুষের সামনে বারবার নাক টানতে থাকা ও নাক ঝাড়তে থাকা।
- গাড় কফ কাশি স্বশব্দে জনসম্মুখে বের করা।
- মানুষের সামনে কিংবা খানার মজলিসে স্বশব্দে ঢেকুর তোলা।
- খাবার চাবানোর সময় চপ চপ শব্দ করা। দু'ঠোঁট বন্ধ করে চাবালে আওয়াজ হয় না।
- সড় সড় শব্দে ডাল চুমুক দিয়ে খাওয়া। ঠোঁটটা একটু বড় করে বাতাসের সাথে ধীরে ধীরে ডাল টেনে খেলে শব্দ হয় না।
কোন দাওয়াতে বা অপরিচিত মানুষের সামনে খাবার খেলে মাথা, হাড়, কাঁটা এ জাতীয় খাবার খাওয়ার সময় সতর্ক থাকা যে খাওয়ার পদ্ধতিটা যেন দৃষ্টিকটু না হয়।
খাবার খাওয়ার সময় প্লেটের কান্দাটা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করা। খাবারের মাঝে মাঝে কয়েকবার আঙ্গুল দিয়ে কান্দাটা পরিষ্কার করে নেয়া।
- অনেকে পরিবার বা বাচ্চাদের সামনে কিংবা বন্ধু-বান্ধবের সামনে ঠাট্টাচ্ছলে শব্দ করে বায়ু ত্যাগ করে। এটি অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ। একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ কখনো এমনটা করতে পারে না।
- পোশাক পরিচ্ছদের মাধ্যমে আপনার রুচি ও ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে। পোশাক দামি হওয়া জরুরী নয়; বরং রুচিশীল এবং পরিচ্ছন্ন হওয়া আবশ্যক।
- জুতা স্যান্ডেল সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখা। অনেকের স্যান্ডেল দেখলে মনে হয় বছরেও মনে হয় একবার মোছেনি। অপরিচ্ছন্ন থাকা কোন বুযুর্গী নয়।
প্রতিবার ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বে জুতা স্যান্ডেলের উপরিভাগ এবং পার্শ ভালো করে মুছে পরিষ্কার করে তারপর পায়ে দেয়া। প্রয়োজনে ভেজা কাপড় ব্যবহার করা। চামড়া হলে মাঝে মাঝে কালি করানো।
এক জায়গায় দশটি জুতো থাকলে আপনি সেগুলো দেখে প্রত্যেকের রুচি ও ব্যক্তিত্ব মাপতে পারেন।
জুতা স্যান্ডেল আমরা বছরে দু'একবার কিনে থাকি। তাই একটু ভালো দেখে কেনা উচিত।
তবে নিয়মিত ঘর থেকে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় সাধারণ চপ্পল পরে যাওয়া ভালো।
দামি জুতা নিয়ে মসজিদে গেলে নিজের সামনের বক্সে সেটিকে হেফাজতের সাথে রেখে নামাজ পড়া।
- ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বে দেখে নিন
আপনার দাঁত ময়লা নয় তো!
আপনার চোখের কোনায় ময়লা জমে নেই তো!
আপনার মুখ থেকে কিংবা শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসছে না তো!
আপনার নাকের কোন পশম বাইরে বেরিয়ে নেই তো!
বাহ্যিকভাবে অনেক সম্মানিত ব্যক্তিদের দেখেছি, কাছে গেলে শরীর থেকে দুর্বন্ধ আসে। কথা বললে মুখ থেকে গন্ধ বের হয়। মানুষ এ সকল বিষয় প্রচন্ড ঘৃণা করে। কিন্তু কেউ মুখ ফুটে বলে না। তাই নিজস্ব ব্যক্তিত্ব রক্ষার্থে নিজেকেই সচেতন থাকতে হবে।
যাদের মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার সমস্যা আছে অথবা লম্বা জার্নিতে কয়েকটি এলাচ পকেটে রাখা যেতে পারে। এলাচ থেকে একটি বিচি বের করে চাবিয়ে নিলে তৎক্ষণাৎ মুখের দুর্গন্ধ চলে যায়।
একটি পোশাক সাধারণত তিন দিনের বেশি পরা ঠিক নয়।
সপ্তাহে অন্তত দুবার পোশাক পরিবর্তন করা চাই।
কিন্তু ভেতরের গেঞ্জি প্রতিদিন পরিবর্তন করা চাই।
শরীরের দুর্গন্ধ সাধারণত গেঞ্জি থেকে আসে। প্রতিদিন গোসলের সময় লুঙ্গির সাথে গেঞ্জিটিও অন্তত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা উচিত। গোসলের পর পরিষ্কার অন্য গেঞ্জি পরা উচিত। শরীরে সাবান দেয়ার পর গায়ের সেই গেঞ্জি দিয়ে শরীর ডললে শরীরের সাথে সাথে গেঞ্জিটিও পরিষ্কার হয়ে যাবে। সোজা কথায় এক গেঞ্জি দুইদিন পরা যাবে না। আর আমাদের দেশের আবহাওয়া যেহেতু আদ্র তাই এখানে প্রতিদিন গোসল করা জরুরী। গোসলের সবচেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত সময় হলো সকালে। কিন্তু যারা পরিশ্রমের কাজ করে ঘর্মাক্ত হয় তাদের জন্য কাজ শেষ করে গোসল করা উচিত। গোসলের পর রেক্সোনা জাতীয় বস্তু বোগলে ব্যবহার করলে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- বসা থেকে ওঠার সময় জামার পেছনের অংশের প্রতি খেয়াল রাখা চাই।
অনেকের বসা থেকে দাঁড়ানোর পর জামার পেছনের অংশ শরীরের অভ্যন্তরে ফেঁসে থাকে। তার কোন খবরই থাকে না। নির্দ্বিধায় নিজের কাজকর্মে ব্যস্ত থাকে। এমন বেখেয়াল না হওয়া চাই।
- গেঞ্জি বা শার্ট এর সাথে লুঙ্গি পরে অনেকে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়। সেজদা রত অবস্থায় পেছনের দৃশ্যটি যদি তাকে ছবি তুলে দেখানো যেত তাহলে সে লজ্জায় মরে যেত। "শ" এর শরীর স্পষ্ট রূপে ফুটে ওঠে। সিজদারত অবস্থায় পেছন থেকে এটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। তাই মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে পাঞ্জাবী পরে যাওয়াটাই উত্তম।
- অনেকে গেঞ্জি শার্ট এর সাথে এমন প্যান্ট পরে যে বসা অবস্থায় "ষ" এর এক-তৃতীয়াংশ বেরিয়ে পড়ে।
পেছনের মানুষরা লজ্জায় পড়ে যায়। অথচ নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত সতর এর অংশ। ঢাকা ফরয।
এ বিষয়গুলো সন্তানদের এবং ছাত্রদের ছোটকাল থেকেই শেখানো উচিত।
এমন কোন বিষয় ছুটে গেলে কমেন্টে যুক্ত করে দিতে পারেন।
No comments:
Post a Comment