Wednesday, September 20, 2023

জাপানে নবাগতদের জন্য

   জাপানে নবাগতদের জন্য

রচনা ও সম্পাদনাঃ ইমরান নুর মানিক
(দোয়ার দরখাস্ত রইল)

ক)আসার আগের নানাবিধ প্রস্তুতি গ্রহণ করার দিকনির্দেশনা

১। বিমানের টিকিট অনুযায়ী (পারলে লাগেজ ওজন করে) মালামাল লাগেজে ভর্তি করা।
২। হাত ব্যাগও মালামাল ভর্তির পর ওজন করে নেয়া আবশ্যক।
৩। কমপক্ষে ১,৫০,০০ থেকে ২,০০,০০০ ইয়েনের ব্যবস্থা করা।
- ইয়েন বাংলাদেশ থেকে কিনে আনতে পারে ( মানি একচেঞ্জ থেকে কিনতে হবে)
- অথবা জাপানে থাকা পরিচিত কারও মাধ্যমে ( তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলা টাকা দেশে প্রদান করে ) জাপানে ইয়েন বুঝে নিতে পারেন।
-মুদ্রা বিনিময় হার Payforex, JME remit , JRF Remit থেকে দেখে নিতে পারেন।
৪। এই ইয়েন আপনি নগদ আপনার সাথে (লাগেজে দিবেন না) বিমানে বহন করতে পারবেন।
৫। যেই বিমানে আসবেন, তাদের সাথে অবশ্যই ইমেলে কন্টাক্ট করে আপনার জন্য হালাল খাবারের ব্যবস্থা করে নিবেন।
৬। বিমান ছাড়ার কমপক্ষে ৪/৫ ঘন্টা আগেই বিমান বন্দরে টিকিটে উল্লেখিত সময়ে নির্ধারিত টার্মিনাল দিয়ে প্রবেশ করবেন। প্রথমেই আপনার লাগেজ, ব্যাগ ইত্যাদি কনভেয়ার বেল্টে দিয়ে চেক করা হবে । খ) বিমান বন্দর ৭। আপনার মোবাইলে যেন যথেষ্ট পরিমানে চার্জ থাকে, এ জন্য দরকার হলে পাওয়ার ব্যঙ্ক সাথে নিবেন।
৮। বিমানে, জাপানের বৈদ্যুতিক রেল এবং বিশ্বরোডের বাসে চার্জ দেয়ার ব্যবস্থা আছে । এজন্য  এদেশের চার্জার ক্যাবল এবং এডাপ্টার সাথে আনতে হবে।
৯। বিমান বন্দরে ঢোকার পর ট্রলি নিয়ে তাতে আপনার লাগেজ ও ব্যাগ বহন করতে পারেন। ট্রলির হাতলে চাপ দিয়ে চালাতে হয়।

১০। এরপর আপনার এয়ারলাইনের কাউন্টার খুজে টিকিট চেক করে নিবেন।এখান থেকে মুল টিকিট পাবেন। যেটা আপনার বোর্ডিং পাস হিসেবে গণ্য হবে।

১১। অতঃপর আপনার লাগেজ ওজন করে বুকিংএ দিবেন। লাগেজের সাথে হাত ব্যাগ ও মাপতে পারে। লাগেজে এবং আপনার পাসপোর্টে অবশ্যই বুকিং স্লিপ লাগাইয়ে দিবে।

১২। এরপর আপনার ইমিগ্রেশন পুলিশ বক্সে চেকিং সম্পাদন করতে হবে। .

১৩।যে সমস্ত কাগজপত্র বিমান বন্দরে চেক করে সেগুলি আর অন্যান্য ডকুমেন্ট এর কপি সাথে রাখবেন। এখানে কোন  কাগজ নিলে সচরাচর ফেরিত দেয়া হয় না। তবে হাতে সময় থাকলে ফটোকপি করতে পারবেন। ভেতরে ফটোকপি মেশিন আছে।

১৪। ফাইনাল চেকিং রুমে বিমানে ওঠার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এজন্য এই রুমে ঢোকার আগেই অজু করে নামাজের ওয়াক্ত হলে নামাজ পরে নিবেন। আর হাত ব্যাগে ছোট জায়নামাজ রাখবেন, যদি বাইরে থেকে পড়া না যায় তাহলে রুমেই মধ্যেই পড়ে নিবেন।

গ) বিমান  ও অবতরণ

১। বিমানে ওঠার আগে বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে।
২। সিট দেখে বসবেন। ট্রানজিটের পর নতুন বিমানেও সিট দেখে বসবেন।
৩। খাবার দেয়ার সময় জুস, মদ ইত্যাদি ফ্রি দেয়। সর্বাবস্থায় হারাম বর্জন করতে হবে। বিশেষ করে গোস্ত, জুস আর দুগ্ধজাত খাবার দিলে অবশ্যই জিজ্ঞেস করে নিতে হবে। টকিট কাটার সময়েই হালাল মিলের জন্য রেজিস্ট্রেশন করবেন।

৪। অবতরনের পর, আপনাকে একটা ফর্ম পুরন করতে হবে , যেখানে আপনার থাকার ঠিকানা লেখা লাগবে। এই ঠিকানা আপনার ভিসা এপ্লিকেশনে লেখা থাকে। ( এক কপি এপ্লিকেশন নিজের সাথে রাখবেন।)
৫। ইমিগ্রেশনে আপনার চেহারা মিলিয়ে দেখবে, পার্ট টাইম জব করতে চান কি না জিজ্ঞেস করবে, হ্যা বললে আপনার রেসিডেন্স কার্ড ( zairyu card) এর উল্টা দিকে ২৮ ঘন্টা/সপ্তাহ ছেপে দিবে।

৬। আপনি কি জন্য জাপানে আসলেন জিজ্ঞেস করবে, আর Admission certificate দেখতে চাইতে পারে।
৭। এখান কার কাজ শেষ হলে, আপনার লাগেজ সংগ্রহ করবেন।
  ঘ) কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছান

১। সবচেয়ে ভাল হয় , দেশ থেকেই কে, কিভাবে , কার সাহায্যে গন্তব্যে পৌঁছাবেন সেটা ঠিক করে আসা। জাপানি ভাষা জান থাকলে অবশ্য ভিন্ন কথা।
২। বিমান বন্দর থেকে রেল/ বাস স্টেশনে গিয়ে টিকিট কাটতে হবে। দ্রুত পৌঁছার জন্য বৈদ্যুতিক ট্রেনে যাওয়াই সবচেয়ে ভাল। আপনার মোবাইলে ট্রেনের পুরা নেভিগেশন দেখে গন্তব্য ইস্টেশনে নামবেন। ট্রেনের মধ্যে ফ্রি ওয়াই ফাই থাকে।
৩। কেউ যদি আপনাকে নিতে আসে তাহলে আর কোন সমস্যা নেই। গন্তব্যে পৌঁছার আগে ট্রেনের মধ্যে নাস্তা করতে পারেন।
৪। গন্তব্যে পৌঁছার পর আপনার থাকার জায়গা বুঝে নিতে হবে। এসময় ভাড়া বাসা হলে, কি মানি, এক মাসের ভাড়া, ইন্স্যুরেন্সের টাকা  নগদ পরিশোধ করতে হতে পারে।  ( যার পরিমাণ সিঙ্গেল রুমের জন্য প্রায় ৮০,০০০ ইয়েন হতে পারে)
৫। রুমে ঢুকে, লক, ট্যাপ,বাথ্রুমের গরম-ঠান্ডা পানির প্রবাহ, লাইট, এসি ঠিক আছে কিনা দেখে নিন। ঙ)প্রথমিক প্রয়োজন

১। ✅ঘুমানর তোষক, গায়ে দেয়ার কম্বল, বালিশ, ✅রান্না করার জন্য গ্যাস/ইন্ডাকশন চুলা, ফ্রাইং প্যান, রাইস কুকার, থালা, গামলা, ✅চপিং বোর্ড, ছুরি , গ্লাস, রান্নার জন্য খুন্তি, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ✅ওয়াশিং মেশিন, ✅ফ্রিজ ।
এগুলোর মধ্যে অনেক বাসায় মালিকের পক্ষ থেকে মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন,ফ্রিজ ,ইন্ডাকশন চুলা দেয়া থাকে। যদি না থাকে তাহলে আসার পর যত দ্রুত সম্ভব এগুলির ব্যবাস্থা করা লাগবে।
২। রান্নার উপকরণঃ যদি হারাম মালে শরীর পরিপুষ্ট করে জাহান্নামের উপযুক্ত হতে না চান তাহলে বাইরের খাবার বাদ দিয়ে নিজে রান্না করে খেতে হবে।
এ জন্য লাগবে 
-গুড়া মসলা - হলুদ, মরিচ, জিরা,ধনে, গরম মসলা ( চাইলে দেশ থেকে আধা কেজি করে আনতে পারেন/ এখান থেকেও অনলাইন হালাল শপ/ সরাসরি যদি কোন শপ থাকে তাহলেসেখান থেকে কিনতে পারবেন )
-কাচা মসলাঃ রসুন, আদা,পেয়াজ ( বাটাও পাওয়া যায়। এগুলো দেশ থেকে আনা যাবে না।)
-রান্না সম্পর্কে প্রথামিক ধারনা থাকা দরকার,  তা-নাহলে হালাল খাবারের জন্য বহু কষ্ট হয়ে যাবে। ( প্রথমদিকে হয়ত দু এক বেলা দাওয়াত পেতে পারেন) চ) কোথায় পাবেন?

১। হাড়ি পাতিল - নতুন (কিনতে চাইলে নানা দামের পাত্র পেতে পারেন )Don Quijote (দঙ্কি নামে পরিচিত), সান ড্রাগ, দাইসো  ( এখান থেকে অল্প দামে অনেক ধরনের জিনিস পাবেন) থেকে নিতে পারবেন।
  
-পুরাতন Joy Plaza Takamatsu store  হতে পাবেন। তবে পুরাতন পাত্র নিলে অবশ্যই নাপাক থেকে পাক করার  তরিকায় পাক করে নিতে হবে। ( যেহেতু  কি ধরনের খাবার প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়েছে জানা নাই তাই অজ্ঞাত উৎসের জামা কাপড়ও পাক করেই ব্যবহার করতে হবে।)
২। জামা কাপড় ও বিছানাপত্রঃ এগুলি Akanoren Shizuokafujimidaiten,Fashion Center Shimamura তে পাবেন। জয় প্লাজা, সান্ড্রাগ, UniQlo,সেকেন্ড ইস্ট্রিট (second hand cloth shop) এগুলিতেও পাবেন।
৩। অন্যান্য খাবার দাবারঃ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এমন convenient store যেমন- Family mart, ‘সেভেন eleven, minimini এগুলিতে হালাল খাবারের কিছু আইটেম পেতে পারেন কিন্তু দাম বেশি হবে। Big ( Aeon Big), Valor, Donki,MoM, গিয়েমু এগুলিতে সাক সবজি, মাছ, পেয়াজ, আলু, বেগুন, রসুন, ফল ইত্যাদি পাবেন। যাই কিনবেন হালাল কিনা দেখে নিবেন। এজন্য হালাল জাপান এর এপ ১৩০০ ইয়েন/বছর ব্যবহার করতে পারেন।


( আরও free app পাবেন, কিন্তু সেগুলোতে শুধু উপাদানের তথ্য থাকে, উৎপাদন প্রক্রিয়া নয়)

৪। হালাল শপঃ অনেক এলাকায় হালাল শপ থাকে সেখান থেকে গোস্ত ও অন্যান্য মসলা পাতি নিতে পারবেন। অনেক অনলাইন হালাল শপ থেকেও নিতে পারবেন। এক্ষত্রে একটা নির্ধারিত পরিমানের ওপরে গেলে কুরিয়ার চার্জ ফ্রি হয়। যেমন বাতিক্রম হালাল শপ। ( এখান থেকে সম্ভব্য দাম সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন)

ছ) যানবাহন

১। চলার জন্য কমপক্ষে একটা সাইকেল লাগবে।যদি স্কুটি, মটরসাইকেল, প্রাইভেট কার চালানোর ইচ্ছা থাকে তাহলে , বিমানে উঠার কমপক্ষে ৪ মাস আগেই দেশের লাইসেন্স পেতে হবে।

২। এখানে আসার আগেই ইন্টারন্যাশনাল লাইসেন্স আনতে হবে।
৩। এখানে এসে যদি পরীক্ষায় পাশ করেন তাহলে এদেশের লাইসেন্স পাবেন।
৫। সাইকেল রাস্তার বাম পাশে চলে, রাতের বেলায় অবশ্যই আলো জালায়ে রাখতে হবে, আর সবসময় মনে রাখতে হবে যে , ফুটপাথের তথা পায়ে হেতে চলা ব্যক্তির অগ্রাধিকার সবচেয়ে বেশি।
৬। বাসে চলাচলের সময় ঢোকার সময়ই টোকেন টেনে নিবেন, তারপর টোকেন অনুযায়ী ভাড়া দিবেন। অথাবা বাস/ট্রেন পাস বানিয়ে নিবেন।
৭। সাধারণত মোবাইলেই চলাচলের সকল দিকনির্দেশনা এবং সম্ভব্য ভাড়ার পরিমাণ ইয়াহু ম্যাপ, গুগোল ম্যাপে পেয়ে যাবেন।
৮।ডাস্টবিন এর জন্য আলদা করে পলিথিনের প্যাকেট (গমি ফুকুরো বলে পরিচিত)কিনতে হবে। Plastic. Bottle. Burnable আলাদা আলাদা জায়গায় ফেলতে হবে। জ)দেশ থেকে আনবেন

১। আপনার পোশাক ( যেগুলি এদেশে পাওয়া যাবে না ) যেমন: 📌পাঞ্জাবি, পায়জামা, টুপি, জায়নামাজ 📌three পিস, শাড়ী, (মহিলা হলে তাঁর যে পোশাক এ দেশে পাওয়া যায় না সেগুলি বিশেষ করে চুল বাধার সকল উপকরণ এখানে অত্যন্ত দামী) 📌লুঙ্গি, গামছা,তোয়ালে ইত্যাদি 📌কেটস ও মোজা ( ৩ জোড়া),ফর্মাল সু , কোট আনতে পারেন 📌বিছানার চাদর, 📌হালাকা শীতের পোশাক, চামড়ার মোজা ( শীত কালে ওজু করে পরা হলে, পরবর্তী অজুর সময় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পা না ধুয়ে মাসেহ করা যায় ) । ভারি শীতের পোশাক এখান থেকে কিনলেই ভাল হয়। ( বাংলাদেশের শীতের পোশাক এখানে বেশিরভাগসময়ই তেমন কাজে আসে না।) 📌ব্রাশ ( ৩/৪টা),পেস্ট ( ফ্যামেলি সাইজ), সুই সুতা, 📌গায়ে মাখা ক্রিম, লিপ জেল, কোল্ড ক্রিম, সাবান, 📌ছোট আয়না, বালিশ, 📌চশমা ( ৪/৫ জোড়া), নেইল কাটার, ব্লেড, 📌প্লাস্টিকের স্যান্ডেল, 📌বাজার করার কাপড়ের ব্যাগ, 📌ছোট ছাতা, 📌ছোট কেঁচি 📌পিঠে কম্পিউটার বহনের ব্যাগ ইত্যাদি।
২। মসলা ( প্রাগুপ্ত) ⏩হলুদ গুড়া,মরিচ গুড়া, ধনে গুড়া, ⏩জিরা, জিরা গুড়া, লবঙ্গ, ফল, দারুচিনি, ⏩গরম মসলা, গরম মসলার গুড়া, ⏩আদা রসুন পেস্ট (তবে কাচা হলে অনেক ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে আটকে দেয়), ⏩মাংসের মসলা, মাছের মসলা, মুরগির মসলা, ☠ কাচা মাল এনে ধরা পড়লে বিমাবন্দরে রেখে দিবে। কাজেই পেয়াজ, কাচা  ঝাল, রসুন, আদা, কাচা আম ইত্যাদি  না আনাই ভাল।
৩। দেশের শীতের পোশাক দামি হলেও, এখানে এসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভাল কাজ করে না। তাই শীতের পোশাক এখানে এসে নিলে ভাল। হালকা পোশাক যেমন ✍ফুল হাতা গেঞ্জি, ✍পোশাকের নীচে পরার পাতলা ট্রাউজার ইত্যাদি কেন লাগতে পারে.
৪। পেন্ডাইভ, হার্ড ডিস্ক আনতে পারেন, তবে কম্পিউটার এখানে এসে কিনলে ভাল। সেকেন্ড হ্যান্ড শপ যেগুলি জাপানিরা চালায় ( যেমন জান পাড়া-Janpara Shizuoka) সেখান থেকে নিতে পারেন। অথবা কিস্তিতেও কম্পানি থেকে কিংবা university coop থেকেও  নিতে পারেন।

৫। প্রয়োজনীয়  ওষুধ যেমন জ্বরের জন্য নাপা, নাপান এক্ট্রা, ✍আমাশয়, ক্রিমিনাশক, গ্রাস্ট্রিকের ওষুধ ✍হালকা এলারজি নাশক ইত্যাদি আনতে পারেন।
✍ব্যাথা নাশক জেল, মলম (আপনি যদি নিয়মিত কোন ওষুধ গ্রহণ করেন সেটা , প্রেসক্রিপশন সহ নিয়ে আসবেন।)
৬। ল্যাবের সুপারভাইজারের জন্য, আর আপনার টিউটরের জন্য দেশি কোন ছটখাট উপহার আনতে পারেন। যেমন বাহারি পার্স। নিজের জন্য আনার উপকরনের লিস্ট (নমুনা)

ঝ)পরিবারকে দ্রুত আনাতে চাইলে
বাচ্চা সহ থাকার জন্য ফ্যামেলি বাসা, সিঙ্গেল থাকার বাসা থেকে আলাদা হয়। নতুন করে বাসায় উঠতে গেলে অনেক টাকা একেবারেই দিয়ে দেয়া লাগে। তাই দুইবার টাকা না দিতে চাইলে প্রথমেই ফ্যামেলি বাসায় ওঠার চেষ্টা করবেন।

১। আপনি ভিজিট ভিসায় এনে পরে রেসিডেন্সির জন্য আবেদন করতে পারেন ( অনেক এলাকায় এই সুবিধা নাও দিতে পারে।)
২। COE এর জন্য আবেদন করে তারপর দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ( ৫ বছরের কম) আনতে পারেন। 👉বিস্তারিত COE (Dependent) Application in JAPAN

৩। এখানে আসার পর আপানার ব্যাংক একাউন্ট যত দ্রুত হবে, তত তাড়াতাড়ি মোবাইল নিতে পারবেন। ৬ মাসের আগে rakuten ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন না করাই ভাল। আর ৬ মাসের আগে, JRF Remit, Payforex থেকে সরাসরি টাকা পাঠাতে পারবেন, জমা করে নয়।
৪। যখন ওয়ার্ড অফিসে যাবেন দ্রুত My number Card  করে ফেলবেন। অনেক সময় এই কার্ডের  সৌজন্যে প্রায় ২০,০০০ ইয়েন পাওয়া যায়। আর ফ্যামেলি আনার জন্য জুমিন হ তুলতে গেলে এই কার্ড লাগবে।

ভালভাবে ০৩,০৪ বা ০৫ বছর অতিক্রান্ত করার জন্য আপনি নিজেই কিছুদিনের মধ্যে অনেক কিছুই শিখে যাবেন, এর পাশাআশি কিছু বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-

১। কখনই বাংগালি অবাংগালি কারও নিন্দা, দোষচর্চা তথা গীবত শুনবেন না আর করবেনও না।

২। যদি কেউ অপছন্দনীয় আচরণ যেমন আপনার সামনে অন্যের দোষচর্চা , অযাচিত কথা কাজ ইত্যাদি করে তাহলে পারলে তাকে সংশধন করান নইলে স্রেফ দূরত্ব বজায় রেখে চলুন।

৩। জাপানি কারও কাছে অন্য জাপানি কিংবা বাংগালির খারাপ কোন বিষয় উল্লেখ না করা বিশেষ করে নিজেদের মধ্যে যে সকল দন্দ সেগুলির ব্যাপারে তাদের না জানানো।

৪। যেখানে আপনার কাজ করা লাগবে , সেখানে বস সম্পর্কে কোন নেতিবাচক কথা কোন জাপানিকে না বলা।

৫। রমযান মাসে সবাই একসাথে কাজ শেষ করা। বসকে ঝুশি করতে গিয়ে অতিরিক্ত কাজ করে অন্যের ধর্ম পালনে অসুবিধা সৃষ্টি না করা।

৬। এদেশীয় মাছ খাওয়ার অভ্যাস করা তাহলে গোস্তের প্রতি আগ্রহ কম থাকবে। ভেলর ( শনি/রবিবার সকাল ০৯ টার দিকে গিয়ে মাছ কিনে কেটে নিতে পারবেন) মম এ বড় মাছ, আর এয়ন বিগে চিংড়ি ও ছোট মাছ পেবেন।

৮। অনেক সময় ছাড় পাবেন ( ১০,২০,৩০,৫০%) ছাড়ের স্টিকার চেনা ( সাধরন্ত হালকা লাল রঙের স্টিকার বারকোডের কিংবা প্যাকেটের গায়ে লাগান থাকে।

৯। ট্রান্সলেটর হিসেবে গুগলের পাশাআশি জাপানে যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং বেশ ভাল কাজ করে Deepl Translator কাজেই এটা ব্যবহার করাই ভাল।

১০। প্রথমে আপনার বডি ক্লক ঠিক হতে কিছুটা সময় লাগবে। ফলে খুমের শিডিউল হয়ত এলোমেলো হয়ে যাবে। কিছুদিন পরেই শরীর এটা মানিয়ে নিবে।

ঞ)মুসলমান হলে অবশ্যই ঈমান রক্ষা করা !

মুসলিম হিসেবে ঈমান টিকিয়ে রাখার জন্য হালাল খাবারের ক্ষেত্রে কোন আপোষ করা যাবে না। জুম্মার নামাজ, মুসল্লা ( মসজিদ) কেন্দ্রিক উঠাবসা করলে ভাল, নইলে কুছুদিন পর থেকেই নিজের জীবন হতে ইসলাম বিদায় নেয়া শুরু করবে। পরবর্তী বংশধর আল্লাহ না করুন, নাস্তিক হবার ব্যাপক সম্ভাবনা আছে।

(বলা হয় অমুসলিম দেশে বসবাসরত মুসলিম পরিবারে জন্মানো সন্তানেরা প্রতি ৪০ বছরে ২৫% হারে নাস্তিক হয়ে যায়)

এটা বড়ই দুঃখজনক যে, ঈমানের দৌলত যা বংশপরম্পরায় লাভ হয়েছিল সেটা পরবর্তী প্রজন্ম থেকে হারিয়ে চিরিস্থায়ী জাহান্নামের বাসিন্দা হয়ে গেল। সুতরাং অমুসলিম দেশে আসার জন্য প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল যেমন; হালাল-হারাম খাদ্য ও উপার্জন সম্পর্কে যথা সম্ভব বিস্তারিত জেনে জায়েন।

পুরুষ মানুষ অমুসলিম দেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই শাদী মোবারক করে নিয়েন। তাছাড়া সেখানে গেলে লাল, হলুদ চামড়া বের করা ললনাদের থেকে নজরের হেফাজত কঠিন হয়ে যাবে। চোখের সামনে যখন স্বল্পদৌর্ঘ পোশাক পরিহিত উজ্জ্বল চামড়ার নারী চলাচল করবে, আর ক্ষুধার্ত অবস্থায় যখন সামনে হারাম ও সন্দেহ যুক্ত খাবার এবং জীবিকার প্রয়োজনে যখন সামনে হারাম ও সন্দেহ যুক্ত কাজের সুযোগ আসবে তখন ঈমানের টালমাটাল অবস্থায় উপনীত হবার ব্যাপক সম্ভাবনা থাকে।
নামজের সময় সূচি জানার জন্য বাংলাদেশ হতে পরিচালিত এই দুটি app ব্যবহার করতে পারেন।
  

No comments:

Post a Comment