Wednesday, September 20, 2023

জাপানে নবাগতদের জন্য

   জাপানে নবাগতদের জন্য

রচনা ও সম্পাদনাঃ ইমরান নুর মানিক
(দোয়ার দরখাস্ত রইল)

ক)আসার আগের নানাবিধ প্রস্তুতি গ্রহণ করার দিকনির্দেশনা

জাপানে আসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা জরুরি, যাতে সফরটি সহজ এবং ঝামেলামুক্ত হয়। নিচে উল্লেখিত নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করলে আপনাদের জন্য যাত্রা আরও সুনির্দিষ্ট এবং সুবিধাজনক হবে:

১. বিমান টিকিট এবং মালামালের প্রস্তুতি

প্রথমত, বিমানের টিকিট বুকিং সম্পূর্ণ করুন এবং টিকিটের তথ্য অনুযায়ী আপনার মালামাল প্রস্তুত করুন। বিশেষভাবে, লাগেজের ওজন চেক করে নিন যাতে অতিরিক্ত চার্জ বা সমস্যা না হয়। অনেক এয়ারলাইন্স কিছু নির্দিষ্ট ওজন সীমা দেয়, তাই সেই অনুযায়ী লাগেজ প্যাক করা জরুরি।

২. হাতব্যাগের মালামাল এবং ওজন

বিমানে ওঠার আগে, আপনার হাতব্যাগের মালামালও সতর্কতার সঙ্গে প্যাক করুন এবং এরও ওজন পরীক্ষা করে নিন। বেশিরভাগ বিমান কোম্পানি নির্দিষ্ট সীমায় হাতব্যাগ বহনের অনুমতি দেয়, তাই অতিরিক্ত ওজন রাখলে আপনাকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হতে পারে।

৩. প্রাথমিক আর্থিক প্রস্তুতি

আপনি জাপানে আসার আগে, কমপক্ষে ১,৫০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ ইয়েনের ব্যবস্থা করুন। এটি আপনাকে প্রথম দিকে আর্থিক সংকট এড়িয়ে চলতে সাহায্য করবে। ইয়েন বাংলাদেশ থেকে আপনি মানি একচেঞ্জের মাধ্যমে কিনতে পারেন, অথবা যদি জাপানে কোনও পরিচিত ব্যক্তি থাকেন, তবে আপনি তার মাধ্যমে বাংলা টাকা প্রদান করে ইয়েন পেতে পারেন। এর জন্য আপনার পরিচিত ব্যক্তির নির্দেশনা মেনে চলুন। মুদ্রা বিনিময়ের সর্বশেষ হার দেখতে পারেন Payforex, JME Remit, এবং JRF Remit-এর ওয়েবসাইটে।

৪. নগদ ইয়েন নিয়ে যাত্রা

আপনার সঙ্গে নগদ ইয়েন রাখা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি লাগেজে না রেখে অবশ্যই আপনার হাতে বা হাতে রাখুন। বিমান যাত্রা চলাকালীন সময়ে যেকোনো সময় আপনাকে নগদ অর্থের প্রয়োজন হতে পারে, বিশেষত ট্রানজিট এবং অন্যান্য জরুরি খরচের জন্য।

৫. হালাল খাবারের ব্যবস্থা

বিমানযাত্রার আগে, যে বিমানে আপনি আসবেন, তাদের সাথে অবশ্যই ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন এবং হালাল (মুসলিম মিল) খাবারের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাবেন। এই বিষয়ে বিমানের কাস্টমার সার্ভিস থেকে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। সাধারণত, আগে থেকে জানালে হালাল (মুসলিম মিল) খাবারের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়।

৬. বিমানবন্দরে আগমনের প্রস্তুতি

বিমান ছাড়ার কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। বিমানবন্দর টিকিটে উল্লেখিত সময়ে নির্ধারিত টার্মিনাল দিয়ে প্রবেশ করুন। প্রথমেই আপনাকে লাগেজ, ব্যাগ ইত্যাদি কনভেয়ার বেল্টে দিয়ে চেক ইন করতে হবে। এভাবে সময়মতো সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন এবং কোনো দেরি বা সমস্যার সম্মুখীন হবেন না।

খ) বিমান বন্দর

৭. মোবাইল চার্জ এবং পাওয়ার ব্যাঙ্ক: বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে নিশ্চিত করুন যে আপনার মোবাইলে পর্যাপ্ত চার্জ আছে। যেহেতু বিমানযাত্রার সময় এবং অন্যান্য সময়ে মোবাইলের চার্জ ফুরিয়ে যেতে পারে, তাই পাওয়ার ব্যাঙ্ক আপনার সাথে রাখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনাকে জরুরি মুহূর্তে সাহায্য করবে।

৮. চার্জারের ব্যবস্থা: বিমানে, জাপানের বৈদ্যুতিক রেল এবং বিশ্বরোডের বাসে চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। তবে, সেখানে যদি আপনার ফোন বা ল্যাপটপ চার্জ করতে চান, তাহলে জাপানের চার্জার ক্যাবল এবং এডাপ্টার সঙ্গে নিয়ে আসা জরুরি। জাপানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সাথে আপনার ডিভাইসের কনেকটিভিটি নিশ্চিত করতে এই উপকরণগুলোর প্রয়োজন।

৯. ট্রলি ব্যবহার: বিমানবন্দরে প্রবেশ করার পর, আপনি আপনার লাগেজ এবং ব্যাগ বহনের জন্য ট্রলি ব্যবহার করতে পারবেন। ট্রলিটি সহজেই পরিচালিত হয়, যেহেতু এর হাতলে চাপ দিয়ে এটি চালানো সম্ভব। এইভাবে আপনার মালামাল বহন করা আরও সহজ এবং নিরাপদ হবে।

১০. টিকিট চেকিং: বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, প্রথমেই আপনার এয়ারলাইনের কাউন্টার খুঁজে টিকিট চেক করে নিন। এখান থেকেই আপনি মূল টিকিট পাবেন, যা আপনার বোর্ডিং পাস হিসেবে গণ্য হবে। এই টিকিটটি বিমানবন্দরের সমস্ত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করবে।

১১. লাগেজ বুকিং: এর পর, আপনাকে আপনার লাগেজ ওজন করে বুকিং কাউন্টারে জমা দিতে হবে। এই প্রক্রিয়ায়, আপনার হাতব্যাগও মাপা হতে পারে। মনে রাখবেন, লাগেজ এবং পাসপোর্টের সাথে অবশ্যই বুকিং স্লিপ লাগিয়ে দেওয়া হবে, যা আপনার যাত্রার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট।

১২. ইমিগ্রেশন চেকিং: লাগেজ জমা দেওয়ার পর, আপনাকে ইমিগ্রেশন পুলিশ বক্সে চেকিং সম্পন্ন করতে হবে। এই পর্যায়টি পাস করার পর আপনি বিদেশী যাত্রার জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন। ইমিগ্রেশন চেকিং সময়টি দ্রুত এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন।

১৩. কাগজপত্রের কপি: বিমানবন্দর চেকিংয়ের সময় যে সমস্ত কাগজপত্র আপনার সংগ্রহে রয়েছে, সেগুলির কপি অবশ্যই আপনার কাছে রাখতে হবে। সাধারণত, এখানে কাগজপত্র ফেরত দেওয়া হয় না, তবে সময় থাকলে আপনি ফটোকপি করতে পারবেন। বিমানবন্দরে ফটোকপি মেশিনও রয়েছে, যা আপনাকে কাগজপত্রের কপি নিতে সহায়তা করবে।

১৪. ফাইনাল চেকিং এবং নামাজের প্রস্তুতি: ফাইনাল চেকিং রুমে গিয়ে বিমান ওঠার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এজন্য এই রুমে ঢোকার আগেই অজু করে নামাজের ওয়াক্ত হলে নামাজ পরে নিবেন।  আপনি চাইলে আপনার হাতব্যাগে ছোট একটি জায়নামাজ রাখবেন, যাতে আপনি বিমানবন্দরের ভিতর বা রুমে নামাজ পড়তে পারেন, যদি বাইরে নামাজ পড়ার পরিবেশ না পাওয়া যায়।


গ) বিমান  ও অবতরণ

১. বিমানযাত্রা শুরুর প্রস্তুতি: বিমান উঠার পূর্বে, বিমানবন্দরের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা প্রয়োজন। টিকিট চেকিং, সিকিউরিটি স্ক্যানিং এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করার পর, আপনি বিমান চলাচলের জন্য প্রস্তুত হবেন।

২. সিট নির্ধারণ: বিমানে ওঠার পর, আপনার নির্ধারিত সিটে বসবেন। যদি ট্রানজিটের মাধ্যমে অন্য একটি বিমানে পরিবর্তন করতে হয়, সেক্ষেত্রে নতুন বিমানে সিট দেখে বসতে ভুলবেন না।

৩. খাবারের নির্বাচন: বিমানে খাবার দেয়ার সময়, সাধারণত জুস, মদ ইত্যাদি ফ্রি দেওয়া হয়, তবে আপনাকে সর্বদা হারাম খাবার পরিহার করতে হবে। বিশেষভাবে, গোস্ত, জুস বা দুগ্ধজাত খাবার পরিবেশন হলে, এসব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন। টিকিট কাটার সময়ই হালাল (মুসলিম মিল) খাবারের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে রাখুন, যাতে নিরাপদে উপভোগ করতে পারেন।

৪. অবতরণের পর ফর্ম পূরণ: অবতরণের পর, আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে। এই ফর্মে আপনার থাকার ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে, যা আপনার ভিসা আবেদনপত্রে উল্লেখ করা থাকে। সুতরাং, ভিসা আবেদনপত্রের একটি কপি নিজের কাছে রাখবেন, যাতে আপনি ঠিকানা লিখতে কোনো অসুবিধায় না পড়েন।

৫. ইমিগ্রেশন চেকিং: ইমিগ্রেশন চেকিংয়ের সময়, আপনার চেহারা যাচাই করে দেখা হবে এবং তারা আপনাকে পার্টটাইম কাজ করার অনুমতি চায় কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারে। যদি আপনি হ্যাঁ বলছেন, তাহলে আপনার রেসিডেন্স কার্ড (Zairyu Card)-এর পেছনে ২৮ ঘণ্টা/সপ্তাহের কাজ করার অনুমতি সিল দেওয়া হবে।

৬. জাপানে আগমনের কারণ এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট: ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন, আপনি কেন জাপানে এসেছেন। তারা আপনার Admission Certificate দেখতে চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আপনার পড়াশোনার উদ্দেশ্য প্রমাণ করে।

৭. লাগেজ সংগ্রহ: ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করার পর, আপনাকে আপনার লাগেজ সংগ্রহ করতে হবে। এটি সাধারণত কনভেয়ার বেল্টে রাখা থাকে, এবং সেখানে আপনার লাগেজ খুঁজে পেতে কিছু সময় নিতে হতে পারে।

  ঘ) কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছান

১. যাত্রার পরিকল্পনা: সবচেয়ে ভালো হবে, দেশ থেকেই আপনার গন্তব্যে পৌঁছানোর উপায় নির্ধারণ করে আসা। আপনি কার সাহায্যে এবং কীভাবে পৌঁছাবেন, তা আগে থেকেই ঠিক করে নিলে যাত্রা অনেক সহজ হবে। তবে, যদি আপনি জাপানি ভাষা জানেন, তাহলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে এবং পরিস্থিতি আরও সহজ হবে।

২. বিমানবন্দর থেকে রেল/বাসে যাত্রা: বিমানবন্দর থেকে রেল বা বাস স্টেশনে গিয়ে আপনার টিকিট কিনে নিন। দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বৈদ্যুতিক ট্রেনে যাওয়া সবচেয়ে ভালো বিকল্প। আপনার মোবাইলে ট্রেনের পুরো নেভিগেশন দেখে আপনি সহজেই আপনার গন্তব্য স্টেশনে নামবেন। অধিকাংশ ট্রেনে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা থাকে, যা আপনার যাত্রা আরো আরামদায়ক করবে।

৩. যদি কেউ আপনাকে নিতে আসে: যদি কেউ আপনাকে বিমানবন্দর থেকে নিতে আসে, তবে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আপনি খুব সহজে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। তবে, ট্রেনের মধ্যে যদি একটু সময় থাকে, তবে সেখানে আপনার পছন্দের নাস্তা খেতে পারেন।

৪. গন্তব্যে পৌঁছানোর পর প্রস্তুতি: গন্তব্যে পৌঁছানোর পর, প্রথমেই আপনার থাকার জায়গাটি বুঝে নিন। যদি ভাড়া বাসা থাকে, তবে তা যথাযথভাবে প্রস্তুত করা জরুরি। সাধারণত, এক মাসের ভাড়া, ইন্স্যুরেন্সের টাকা এবং অন্যান্য খরচ নগদ পরিশোধ করতে হতে পারে। সিঙ্গেল রুমের জন্য এই খরচ প্রায় ৮০,০০০ ইয়েন হতে পারে, তবে এটি নির্ভর করে বাসার ধরন ও অবস্থানের ওপর।

৫. রুমে প্রবেশের পর পরীক্ষা করুন: রুমে প্রবেশ করার পর, প্রথমে আপনার রুমের সমস্ত সুবিধা চেক করে নিন। দরজার লক, ট্যাপ, বাথরুমের গরম এবং ঠান্ডা পানির প্রবাহ, লাইট, এসি—সব কিছু ঠিকভাবে কাজ করছে কি না তা পরীক্ষা করে নিন। এটি নিশ্চিত করে নিলেই আপনি আরামদায়কভাবে আপনার নতুন পরিবেশে জীবন শুরু করতে পারবেন।

ঙ)প্রথমিক প্রয়োজন

১. বাসার মৌলিক সরঞ্জাম: নতুন জায়গায় থাকাকালীন কিছু মৌলিক জিনিসপত্র খুবই প্রয়োজনীয়। এগুলি আপনাকে আরামদায়ক জীবনযাপন করতে সহায়তা করবে:

  • ঘুমানোর জন্য: তোষক, কম্বল, বালিশ

  • রান্নাঘরের জন্য: গ্যাস বা ইনডাকশন চুলা, ফ্রাইং প্যান, রাইস কুকার, থালা, গামলা, চপিং বোর্ড, ছুরি, গ্লাস, রান্নার জন্য খুন্তি, মাইক্রোওয়েভ ওভেন

  • বাড়ির অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি: ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ

অনেক বাসায় মালিকের পক্ষ থেকে এসব সুবিধা যেমন মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ, ইনডাকশন চুলা সরবরাহ করা হয়। তবে যদি এসব না থাকে, তবে আসার পর যত দ্রুত সম্ভব এগুলোর ব্যবস্থা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

২. রান্নার উপকরণ: 

যদি আপনি শরীরকে হারাম খাবারের মাধ্যমে পরিপুষ্ট করে জাহান্নামের যোগ্য হতে না চান, তবে বাইরের খাবার বাদ দিয়ে নিজেই রান্না করা সবচেয়ে ভালো। এ জন্য আপনার কিছু মৌলিক রান্নার উপকরণের প্রয়োজন হবে:

  • গুড়া মসলা: হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনে, গরম মসলা (আপনি চাইলে এই মসলা দেশ থেকে কিছুটা আনতে পারেন অথবা এখানে অনলাইন হালাল শপ বা স্থানীয় শপ থেকে কিনতে পারবেন)

  • কাঁচা মসলা: রসুন, আদা, পেয়াজ (এগুলো এখানে সহজেই পাওয়া যায়, তবে দেশ থেকে আনা সম্ভব নয়)

রান্না সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা থাকা দরকার, তা না হলে হালাল খাবারের ব্যবস্থা করতে বেশ কষ্ট হতে পারে। তবে, প্রথম দিকে আপনি হয়তো কোনো দু-একটি দাওয়াত পেতে পারেন, যা আপনাকে কিছুটা সাহায্য করতে পারে।

চ) কোথায় পাবেন?

১. হাড়ি পাতিল: নতুন হাড়ি-পাতিল কিনতে চাইলে আপনি বিভিন্ন দামের পাত্র পাবেন Don Quijote (দঙ্কি), সান ড্রাগ, এবং দাইসো থেকে। এখানে আপনি অল্প দামে নানা ধরনের রান্নার সরঞ্জাম পেতে পারেন।

পুরাতন পাত্রের জন্য, আপনি Joy Plaza থেকে কিনতে পারেন। তবে, পুরাতন পাত্র ব্যবহার করার আগে অবশ্যই সেগুলো ভালোভাবে পাক করে নিতে হবে, কারণ আমরা জানি না সেগুলো কোন ধরনের খাবার প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়েছিল। একইভাবে, অজ্ঞাত উৎসের জামা-কাপড়ও ব্যবহারের আগে ভালোভাবে পাক করা উচিত।

২. জামা কাপড় ও বিছানাপত্র: জামা কাপড় এবং বিছানাপত্র কিনতে চাইলে, আপনি Akanoren এবং Fashion Center Shimamura তে গিয়ে এসব পণ্য পেতে পারেন। এছাড়া, Joy Plaza, সান ড্রাগ, UniQlo, এবং Second Hand Cloth Shop (সেকেন্ড ইস্ট্রিট) থেকেও জামা-কাপড় সংগ্রহ করতে পারবেন।

৩. অন্যান্য খাবার দাবার: Family Mart, Seven Eleven, Minimini – এই ধরনের ২৪ ঘণ্টা খোলা কনভিনিয়েন্ট স্টোরগুলিতে কিছু হালাল খাবারের আইটেম পাওয়া যেতে পারে, তবে এগুলির দাম একটু বেশি হবে। সাধারণত, সাকসবজি, মাছ, পেয়াজ, আলু, বেগুন, রসুন, ফল ইত্যাদি আপনি Big (Aeon Big), Valor, Donki, MoM, Giemu এসব বড় সুপারমার্কেট থেকে কিনতে পারবেন।
যাই কিনবেন, তা অবশ্যই হালাল কিনা দেখে নিবেন। এর জন্য Halal Japan অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, যা বছরে ১৬০০ ইয়েনের সাবস্ক্রিপশনে পাওয়া যায়। (এছাড়া, কিছু ফ্রি অ্যাপও রয়েছে, তবে সেগুলিতে শুধুমাত্র উপাদানের তথ্য থাকে, উৎপাদন প্রক্রিয়া নয়)

৪. হালাল শপ: অনেক এলাকায় হালাল শপ রয়েছে, যেখানে আপনি গোস্ত এবং অন্যান্য মসলা-পাতা কিনতে পারবেন। এছাড়া, অনেক অনলাইন হালাল শপ থেকেও এসব পণ্য কিনতে পারবেন। অনেক সময়, যদি আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণের পণ্য অর্ডার করেন, তবে কুরিয়ার চার্জ ফ্রি হয়ে যায়। যেমন Gumna Halal, Almodina Halal shop, JB halal, Batikram Halal Shop – এখানে আপনি সম্ভাব্য দাম সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন।


  

ছ) যানবাহন


১. চলাচলের জন্য সাইকেল: যাতায়াতের জন্য কমপক্ষে একটি সাইকেল থাকা প্রয়োজন। যদি আপনি স্কুটি, মোটরসাইকেল বা প্রাইভেট কার চালানোর ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে বিমানে ওঠার কমপক্ষে ৪ মাস আগে দেশে আপনার লাইসেন্স সংগ্রহ করা উচিত।

২. ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স: এখানে আসার আগে অবশ্যই ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করুন। এটি আপনাকে জাপানে গাড়ি চালানোর জন্য প্রাথমিক অনুমতি প্রদান করবে।

৩. জাপানে লাইসেন্স: যদি আপনি এখানে এসে ড্রাইভিং পরীক্ষায় পাশ করেন, তাহলে আপনি সহজেই জাপানের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।

 আর যদি কোন লাইসেন্স না থাকে তাহলে শুধু সাইকেল চালাতে পারলেই স্কুটির লাইসেন্স তুলতে পারবেন। বিস্তারিত;

জাপানে যেভাবে স্কুটি লাইসেন্স পাবেন

৪. সাইকেল চালানোর নিয়ম:

সাইকেল চালানোর সময়, রাস্তায় বাম দিকে চলতে হবে। রাতে সাইকেল চালানোর সময় অবশ্যই লাইট অন করতে হবে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ফুটপাথে হাঁটতে থাকা মানুষদের অগ্রাধিকার দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি, তাই সবসময় এ ব্যাপারে সচেতন থাকুন। বর্তমানে সাইকেল এর জন্য আলাদা ট্রাফিক আইন কয়রা হয়েছে। সেগুলি অবশ্যই জেনে নিবেন। নইলে অনেক টাকা জরিমানা সহ, জাপান থেকে বের করে দিতে পারে।

৫. বাসে যাতায়াত: বাসে  উঠার সময় প্রথমেই টোকেন সংগ্রহ করুন, এবং পরে টোকেনের উপর নির্ভর করে ভাড়া প্রদান করুন। এছাড়া, আপনি বাস বা ট্রেনের জন্য পাসও বানিয়ে নিতে পারেন, যা আপনাকে নিয়মিত যাতায়াতে সুবিধা দিবে।

৬. মোবাইলে যাতায়াতের তথ্য: সাধারণত মোবাইল ফোনে চলাচলের সকল দিকনির্দেশনা এবং সম্ভাব্য ভাড়া আপনি Yahoo Map বা Google Map এর মাধ্যমে সহজেই পেয়ে যাবেন, যা আপনার যাত্রাকে আরও সহজ করবে।

৭. ডাস্টবিন ব্যবস্থাপনা: জাপানে ডাস্টবিন ব্যবস্থাপনা খুবই সুনির্দিষ্ট। এজন্য আলাদা করে পলিথিন প্যাকেট (গমি ফুকুরো বলে পরিচিত) কিনতে হবে। প্লাস্টিক বোতল, জ্বলনশীল বর্জ্য, ইত্যাদি আলাদা আলাদা জায়গায় ফেলা উচিত।


জ)দেশ থেকে আনবেন

১. পোশাক: এখানে কিছু পোশাক পাওয়া যাবে না, তাই সেগুলি দেশের থেকেই নিয়ে আসা উচিত। যেমন:
  • পাঞ্জাবি, পায়জামা, টুপি, জায়নামাজ

  • থ্রি পিস, শাড়ি (মহিলা হলে, এমন পোশাক যেগুলি এদেশে পাওয়া যায় না)

  • লুঙ্গি, গামছা, তোয়ালে ইত্যাদি

  • কেটস ও মোজা (৩ জোড়া), ফর্মাল সু, কোট ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • বিছানার চাদর ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • হালকা শীতের পোশাক, চামড়ার মোজা (শীতকালে ওযু করে পরলে, পরবর্তী ওযুর সময় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পা না ধুয়ে মাসেহ করা যায়)

  • ভারী শীতের পোশাক এখানে এসে কেনা ভালো (বাংলাদেশের শীতের পোশাক এখানে সাধারণত তেমন কাজে আসে না)

  • ব্রাশ (৩/৪টা), ফ্যামিলি সাইজ পেস্ট, সুই সুতা ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • গায়ে মাখা ক্রিম, লিপ জেল, কোল্ড ক্রিম, সাবান ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • ছোট আয়না, বালিশ ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • চশমা (৪/৫ জোড়া), নেইল কাটার, ব্লেড ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • প্লাস্টিকের স্যান্ডেল ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • বাজার করার কাপড়ের ব্যাগ ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • ছোট ছাতা ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • ছোট কাঁচি ( এখানেও পাওয়া যায়)

  • পিঠে কম্পিউটার বহনের ব্যাগ ইত্যাদি। ( এখানেও পাওয়া যায়)

    ( এখানেও পাওয়া যায় তবে দাম বাংলাদেশ থেকে বেশি। আর প্রথমে আসার সময় জায়গা থাকলে আনাই ভাল।)

২. মসলা: দেশি রান্নার স্বাদ বজায় রাখতে কিছু মসলা নিয়ে আসা ভালো। যেমন:

  • হলুদ গুড়া, মরিচ গুড়া, ধনে গুড়া ( এখানেও পাওয়া যায় দাম অনেক বেশি )

  • জিরা, জিরা গুড়া, লবঙ্গ, দারুচিনি ( এখানেও পাওয়া যায় দাম অনেক বেশি )

  • গরম মসলা, গরম মসলার গুড়া ( এখানেও পাওয়া যায় দাম অনেক বেশি )

  • মাংসের মসলা, মাছের মসলা, মুরগির মসলা ( আগের মতই দামী )

  • তবে কাচা মসলা (যেমন পেয়াজ, কাচা ঝাল, রসুন, আদা, কাচা আম) বিমানবন্দরে আটকা পড়তে পারে, তাই এগুলো আনা এড়িয়ে চলুন।

৩. শীতের পোশাক: দেশের শীতের পোশাক দামি হলেও, এখানকার শীতের জন্য সাধারণত উপযুক্ত নয়। তাই শীতের পোশাক এখানে কেনা ভালো। তবে, কিছু হালকা পোশাক যেমন:

  • ফুল হাতা গেঞ্জি

  • পোশাকের নিচে পরার পাতলা ট্রাউজার ইত্যাদি দেশে নিয়ে আসা উচিত।

৪. পেনড্রাইভ, হার্ড ডিস্ক: পেনড্রাইভ বা হার্ড ডিস্ক আনা যেতে পারে, তবে কম্পিউটার এখানে কেনা ভালো। আপনি জাপানে সেকেন্ড হ্যান্ড শপ থেকেও কম্পিউটার কিনতে পারেন (যেমন Janpara Shizuoka)। এছাড়া, কিস্তিতেও কম্পানি বা University Coop থেকে কেনা সম্ভব।

৫. প্রয়োজনীয় ওষুধ: কিছু সাধারণ ওষুধও সঙ্গে নিয়ে আসা উচিত:

  • জ্বরের জন্য নাপা, নাপান এক্সট্রা

  • আমাশয়, ক্রিমিনাশক, গ্রাস্ট্রিকের ওষুধ

  • হালকা এলার্জি নাশক

  • ব্যথা নাশক জেল, মলম ( সকল ক্ষেত্রে প্রেসক্রিপশন থাকা ভাল )
    যদি নিয়মিত কোনো ওষুধ খান, তাহলে তা প্রেসক্রিপশনসহ নিয়ে আসবেন।

৬. উপহার: আপনার ল্যাবের সুপারভাইজার বা টিউটরের জন্য দেশি কোনো ছটখাট উপহার নিয়ে আসতে পারেন, যেমন: বাহারি পার্স বা অন্যান্য ছোট উপহার।


নিজের জন্য আনার উপকরনের লিস্ট (নমুনা)

ঝ)পরিবারকে দ্রুত আনাতে চাইলে

যদি আপনার পরিবারকে দ্রুত আপনার কাছে আনতে চান, তবে বিশেষ কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। পরিবারসহ থাকার জন্য ফ্যামিলি বাসা এবং সিঙ্গেল বাসার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। নতুন বাসায় উঠতে গেলে অনেক টাকা একেবারে একসাথে পরিশোধ করতে হয়, তাই আপনি যদি দুটি বাসার জন্য আলাদা টাকা না দিতে চান, তাহলে প্রথম থেকেই ফ্যামিলি বাসা খোঁজার চেষ্টা করুন।

  1. ভিজিট ভিসায় পরিবার আনতে: আপনি যদি ভিজিট ভিসায় পরিবারকে নিয়ে আসেন, তাহলে পরে রেসিডেন্সি বা বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, কিছু এলাকায় এই সুবিধা নাও পাওয়া যেতে পারে, তাই এ বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন।

  2. COE (Certificate of Eligibility) এর মাধ্যমে আবেদন: আপনি যদি COE এর জন্য আবেদন করেন, তাহলে পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘমেয়াদী ভিসার জন্য (৫ বছরের কম নয়) আবেদন করতে পারবেন। এটি আপনাকে দ্রুত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসতে সাহায্য করবে।👉বিস্তারিত COE (Dependent) Application in JAPAN

  3. ব্যাংক একাউন্ট ও মোবাইল সেবা: এখানে আসার পর আপনার ব্যাংক একাউন্ট যত দ্রুত হবে, তত তাড়াতাড়ি মোবাইল সিম নেওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে, ৬ মাসের আগে Rakuten ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন না করাই ভালো। এছাড়া, ৬ মাসের আগে JRF Remit বা Payforex এর মাধ্যমে সরাসরি টাকা পাঠানোর সুবিধা রয়েছে, তবে ব্যাংক একাউন্টে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা ৬ মাস পরই সম্ভব।

  4. My Number Card: যখন আপনি ওয়ার্ড অফিস এ যাবেন, তখন দ্রুত My Number Card এর জন্য আবেদন করে ফেলুন। এই কার্ডটি আপনি বিভিন্ন সরকারি সুবিধা নিতে এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের জন্য Jumin H (住民票) তুলতে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া, অনেক সময় এই কার্ডের মাধ্যমে প্রায় ২০,০০০ ইয়েন পর্যন্ত সাহায্য পাওয়া যেতে পারে

ভালভাবে ০৩,০৪ বা ০৫ বছর অতিক্রান্ত করার জন্য আপনি নিজেই কিছুদিনের মধ্যে অনেক কিছুই শিখে যাবেন, এর পাশাআশি কিছু বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-

১। কখনই বাংগালি অবাংগালি কারও নিন্দা, দোষচর্চা তথা গীবত শুনবেন না আর করবেনও না।

১. নিন্দা বা গীবত থেকে দূরে থাকুন: কখনওই বাঙালি বা অবাঙালির নিন্দা, দোষচর্চা বা গীবত শুনবেন না এবং নিজেও করবেন না। এটি আপনার মনোভাব এবং পরিবেশকে নষ্ট করতে পারে।

২. অপছন্দনীয় আচরণে সতর্ক থাকুন: যদি কেউ আপনার সামনে অন্যের দোষচর্চা, অযাচিত মন্তব্য বা কাজ করে, তাহলে তাকে যতটা সম্ভব সরাসরি সংশোধন করুন। যদি সেটি সম্ভব না হয়, তাহলে স্রেফ দূরত্ব বজায় রাখুন এবং পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসুন।

৩. অন্যের দোষ না প্রকাশ করা: জাপানি বা অন্য কোনো দেশের ব্যক্তির কাছে অন্য জাপানি বা বাঙালির খারাপ বিষয় উল্লেখ করা উচিত নয়। বিশেষ করে নিজেদের মধ্যে যে ধরনের দন্দ বা অশান্তি থাকে, সেগুলি তাদের কাছে তুলে ধরা উচিত নয়।

৪. বস বা সহকর্মীর সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য না করা: যেখানে আপনি কাজ করছেন, সেখানে আপনার বস বা সহকর্মী সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক কথা বলবেন না, বিশেষ করে জাপানি সহকর্মীদের কাছে। এটি আপনার কর্মজীবনকে সুস্থ এবং সম্পর্কগুলোকে উন্নত রাখবে।

৫. রমজান মাসে সম্মান বজায় রাখা: রমজান মাসে সবসময় একসাথে কাজ শেষ করা উচিত। বসকে খুশি করার জন্য অতিরিক্ত কাজের বোঝা  নিজের ওপর চাপিয়ে, বেশি সময় অফিসে ত অবস্থান করে,  অন্যদের ধর্মীয় আচরণে অসুবিধা সৃষ্টি করবেন না। সবার ধর্মীয় শ্রদ্ধা ও সময়ের প্রতি সম্মান দেখান।

৬. এদেশীয় মাছ খাওয়া: এদেশের মাছ খাওয়ার অভ্যাস করলে গোস্তের প্রতি আগ্রহ কমবে। যেমন, ভেলর (শনি/রবিবার সকাল ০৯টার দিকে গিয়ে মাছ কিনে কাটানো যায়), মম এ বড় মাছ পাওয়া যায় এবং এয়ন বিগ-এ চিংড়ি ও ছোট মাছ পাওয়া যাবে।

৭. ডিসকাউন্ট স্টিকার চেনা: অনেক সময় পণ্যে ১০%, ২০%, ৩০% বা ৫০% ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়। ডিসকাউন্ট স্টিকার সাধারণত হালকা লাল রঙের হয়ে থাকে এবং এটি বারকোড বা প্যাকেটের গায়ে থাকে। তাই এসব স্টিকার চেনা এবং সেগুলি ব্যবহার করা ভালো।

৮. অনুবাদ সেবা ব্যবহার করা: গুগল ট্রান্সলেটর এবং Deepl Translator জাপানে খুব জনপ্রিয় এবং যথেষ্ট কার্যকর। আপনি এই দুটি অ্যাপ ব্যবহার করে ভাষাগত বাধা সহজে অতিক্রম করতে পারবেন।

৯. বডি ক্লক ও সময়ের সাথে মানিয়ে চলা: প্রথমদিকে আপনার শরীরের বডি ক্লক ঠিক হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে, যার ফলে ঘুমের শিডিউল এলোমেলো হতে পারে। তবে কিছুদিন পর শরীর স্বাভাবিকভাবে এই নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেবে।


ঞ)মুসলমান হলে অবশ্যই ঈমান রক্ষা করা !

মুসলিম হিসেবে ঈমানকে দৃঢ় রাখতে, হালাল খাবারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপস করা উচিত নয়। জুম্মার নামাজ আদায়, মসজিদে নিয়মিত মুসল্লা হিসেবে উপস্থিত থাকা, এবং ইসলামি জীবনযাপন যদি সম্ভব হয়, তবে সেগুলি পালন করতে হবে। যদি তা না হয়, তবে কিছুদিন পর হয়তো নিজের জীবন থেকে ইসলামের প্রভাব হারানো শুরু হবে, এবং পরবর্তী বংশধরের মধ্যে ঈমানের সংকট তৈরি হতে পারে। আল্লাহ না করুন, এমন পরিস্থিতি থেকে পরবর্তী প্রজন্ম নাস্তিক হয়ে যেতে পারে।

বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে যে, অমুসলিম দেশে জন্ম নেওয়া মুসলিম সন্তানেরা প্রতি ৪০ বছরে প্রায় ২৫% হারে নাস্তিক হয়ে যায়। এটি খুবই দুঃখজনক যে, ঈমানের যে দৌলত আমাদের বংশপরম্পরায় ছিল, তা পরবর্তী প্রজন্মে হারিয়ে গিয়ে তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামের বাসিন্দা হয়ে যায়।

সুতরাং, অমুসলিম দেশে আসার জন্য হালাল-হারাম খাদ্য ও উপার্জন সংক্রান্ত মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবসময় ইসলামি বিধি-বিধান মেনে চলা উচিত।

পুরুষদের জন্য সতর্কতা:অমুসলিম দেশে যাওয়ার আগে, অবশ্যই শাদী মোবারক করে নেয়া উচিত। এর কারণ, সেখানে গেলে চোখের সামনে স্বল্পদৈর্ঘ্য পোশাক পরিহিত উজ্জ্বল চামড়ার নারীদের চলাফেরা একেবারে সাধারণ হয়ে ওঠে। এতে আপনার জন্য চোখের হেফাজত কঠিন হতে পারে। তাছাড়া, যদি ক্ষুধার্ত অবস্থায় হারাম ও সন্দেহজনক খাবারের সম্মুখীন হন, অথবা জীবিকার প্রয়োজনে হারাম ও সন্দেহজনক কাজের সুযোগ আসে, তবে ঈমানের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

নামাজের সময়সূচী জানার জন্য আপনি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত এই দুটি অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, যা আপনাকে নামাজের সময় সঠিকভাবে জানিয়ে দিবে।

  

No comments:

Post a Comment