১২ রমাযানে দ্রুত বিয়ের জন্য একটি পরীক্ষিত আমল এইটা একটা পরীক্ষিত আমল। বহু বছর থেকে এ আমলটি জামেয়া দারুল উলূম কারচি'র সাবেক শাইখুল হাদীস ও সদর মুফতী রফী উসমানী রহ. এর পক্ষ হতে প্রচারিত। আরও অনেক বুযুর্গদের এটি মুজাররাব। অগণিত মানুষ এর দ্বারা উপকৃত হয়েছেন। যেসব অভিভাবক অবিবাহিত ছেলে মেয়েদের বিবাহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন, তারা আমলটি করতে পারেন। বিবাহ উপযুক্ত ছেলে মেয়েরাও নিজেদের জন্য এটি করতে পারেন। শরীয়তের বিধান তথা ফরজ ওয়াজিব সুন্নাত মনে না করে স্রেফ বুুযুর্গদের মুজাররাব আমল হিসাবে করতে কোনো অসুবিধা নেই। ইন শা আল্লাহ, দ্রুত সুফল লাভ করবেন।
এই আমলটি রমাযানের ১২ তারিখের রাতে তারাবীহের পরে অথবা শেষরাতে তাহাজ্জুদের সময় করতে হবে।
আমলের নিয়মঃ- ১) প্রথমে ১০১ বার দরূদ শরীফ পড়বে।
২) এরপর ১২ রাকাআত নফল নামায পড়বে, দুই দুই রাকাআত করে। প্রত্যেক রাকাআতে সুরা ফাতেহার পর ১২ বার সুরা ফীল পড়বে।
৩) নামায শেষে পুনরায় ১০১ বার দরূদে ইবরাহীমী পড়বে।
৪) এরপর নবীজির (সা.) এর প্রতি আমলটির ঈসালে সওয়াব করবে।
৫) বিয়ের জন্য কিছুক্ষণ দুআ করার পর কোনো কথাবার্তা না বলে ঘুমিয়ে পড়বে।
নোটঃ দারুল উলূম করাচির দারুত তাসনীফের সদস্য মাওলানা মাহমূদ হাসান হাফি. এর মাধ্যমে আমলটির সনদ নিশ্চিত করা হয়েছে। - মুহাম্মাদ সাইফুদ্দীন গাজী ১০ রমাযান ১৪৪৪ হিজরী
যেসব যুবক-যুবতীদের বিবাহের বয়স অতিক্রম হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না, তাদের মধ্যে যুবকেরা ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি চেপে ধরে এবং যুবতীরা বাম হাত দিয়ে দান হাতের কব্জি চেপে ধরে প্রত্যহ ফজরের নামাজের পর সূর্যোদয়ের আগে ৪০ বার হিসাবে ৪০ দিন পর্যন্ত ইয়া ফাত্তাহু (الفتاح) অর্থ হে উন্মুক্তকারী বা প্রস্তুকারী পড়বেন।
নিয়মিত নামাজের পর তাসবিহে ফাতেমি পড়লে দ্রুত বিয়ে হতে পারে। আর তাসবিহে ফাতেমি পড়ার আগে কুরআন তেলাওয়াত ও দরূদ পাঠ করে পড়া উত্তম। তাসবিহে ফাতেমি হলো- - اَلْحَمْدُ لِلّه : আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার পড়া।
সুরা তাওবার এ আয়াতটি তেলাওয়াত করা: فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
উচ্চারণ : ফাইং তাওয়াল্লাও ফাকুল হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম।
বিবাহ ইসলামের অন্যতম প্রধান সামাজিক বিধান এবং মহানবী ﷺ-এর এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। বিয়ে করা শুধু মহানবী মুহাম্মাদ ﷺ-এর সুন্নাহই নয়; বরং তা অন্যান্য নবীগণেরও সুন্নাহ।
আল্লাহ তা'আলা বলেন: وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلاً مِنْ قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجاً وَذُرِّيَّةً আমি আপনার পূর্বে অনেক রাসূল প্রেরণ করেছি এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান দিয়েছি। (সূরা রাদ : ৩৮)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন: "নিশ্চয়ই আমি নারীদের বিয়ে করি। সুতরাং যে আমার সুন্নাহ থেকে বিমুখ হবে, সে আমার (উম্মাহর) অন্তর্ভুক্ত নয়।" (সহিহ বুখারী : ৫০৬৩; সহিহ মুসলিম : ১৪০১)
🔴 দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য আমলঃ (প্রতিদিন ফজর এবং মাগরীবের ফরয সালাতের পর পড়বেন)
1⃣ দরূদে ইব্রাহীম (৩ বার)
اَللّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ اٰلِ مُحَمَّدٍ
(হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ(সঃ)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ(সঃ)-এর বংশধরগণের উপর রহমত নাযিল করুন।)
كَمَا صَلَّيْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ اٰلِ إِبْرَاهِيمَ
(যেমন আপনি রহমত নাযিল করেছিলেন ইবরাহীম(আঃ) এবং ইবরাহীম(আঃ)-এর বংশধরগণের উপর।)
إِنَّكَ حَمِيدٌ مَّجِيدٌ
(নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসনীয়,সম্মানীয়। )
اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ اٰلِ مُحَمَّدٍ
(হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ(সঃ)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ(সঃ)-এর বংশধরগণের উপর বরকত দিন।)
كَمَا بَارَكْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ اٰلِ إِبْرَاهِيمَ
(যেমন আপনি বরকত দিয়েছিলেন ইবরাহীম(আঃ) এবং ইবরাহীম(আঃ)-এর বংশধরগণের উপর।)
إِنَّكَ حَمِيدٌ مَّجِيدٌ (নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসনীয়,সম্মানীয়।) (বুখারী : ৩৩৭০)
2⃣ সূরা কাসাসের ২৪ নং আয়াতের অংশ (৭ বার)
رَبِّ اِنِّيْ لِمَاۤ اَنْزَلْتَ اِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيْرٌ "রব্বি ইন্নী লিমা--- আনঝালতা ইলাইয়্যা মিন খইরিন ফাক্বীর।" (আরবি পড়া উত্তম, বাংলায় পড়লে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে)
আয়াতের অর্থঃ হে আমার রব, নিশ্চয় আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাযিল করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী।
কখন, কোন পরিস্থিতিতে মূসা (আঃ) এই দু'আ করেছিলেন তা বুঝতে সূরা কাসাস এর (১৫-২৪) নাম্বার আয়াত পড়তে পারেন
3⃣ সূরা তাওবাহ্ ১২৯ নং আয়াতের অংশ (৭ বার)
حَسْبِيَ اللّٰهُ ﻵ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ "হাসবি ইয়াল্লহু লা--- ইলা-হা ইল্লা হুয়া 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রব্বুল 'আরশিল 'আযীম।" (আরবি পড়া উত্তম, বাংলায় পড়লে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে)
আয়াতের অর্থঃ আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ্ নেই । আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা’আরশের রব।
4⃣ ইস্তিখারার সংক্ষিপ্ত দু'আ (৭ বার) اللَّهُمَّ خِرْ لِي وَاخْتَرْ لِي
"আল্লহুম্মা খিরলী ওয়াখ তারলী।" (আরবি পড়া উত্তম, বাংলায় পড়লে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে)
আয়াতের অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমার জন্য যেটা মঙ্গল সে দিকে আমাকে চালিত করুন। (সুনান তিরমিযী : ৩৫১৬; সুনান ইবনু মাজাহ্ : ১৫৫৭)
5⃣ দরূদে ইব্রাহীম (৩ বার) ©
মুফতি আরিফুল ইসলাম উস্তায কর্তৃক আমলকৃত এবং বর্ণনাকৃত (ইরানের একজন শায়েখ থেকে সংগৃহীত)
♦️ এই আমলটি করার পর এক গ্লাস পানি নিন।
তাতে নিয়্যাত সহ সাত বার করে সূরা ফাতিহা, সূরা নাস, সূরা ফালাক্ব, সূরা ইখলাস, সূরা কাফিরুন এবং আয়াতুল কুরসী পড়ে ফুঁ দিন।
প্রতিবার সূরা পড়ার পর একবার করে পানিতে ফুঁ দিবেন।
এরপর এই পড়া পানিটুকু নিয়্যাত অনুযায়ী পান করবেন।
▪️নিয়্যাতঃ বিয়ের উপর থাকা সকল বাঁধা অথবা যাদু, নজর, হাসাদ ও জ্বীনকে ধ্বংস করা।
🔶 দ্রুত বিয়ের আমল হিসেবে শায়খ আতিক উল্লাহ হুজুরের লিখাটি নিচে সংযুক্ত করে দেওয়া হলো–
১. বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। যথাসম্ভব সার্বক্ষণিক এস্তেগফার করা। উঠতে বসতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকা।
২. সুরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াতটা পড়তে পারি। প্রতি ফরজ নামাজের পর তো বটেই, সুযোগ পেলেই দোয়াটি গভীর আবেগ নিয়ে পড়তে পারি। رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
৩. বেশি বেশি দোয়া করা। বিশেষ করে দুয়া কবুল হওয়ার সময়গুলো একটাও যেন দোয়াবিহীন না যায়।
৪. আমল-দোয়ার পাশাপাশি হালাল পন্থায় পাত্র/পাত্রীর খোঁজ করাও জরুরী।
৫. অনেক সময় জাদু-সিহর করে বিয়ে আটকে রাখা হয়। এজন্য রুকইয়া করা।
৬. নিয়মিত সদকা করা।